ফেসবুক বা টুইটারের মতো সাইট গুলো হঠাৎ লোড না নিলে অনেক সময় সেটা স্বাভাবিক ব্যাপার, কেননা আপনার অফিস বা ওয়ার্ক প্লেস থেকেই হয়তো এই সাইট গুলো ব্লক করা থাকতে পারে। কিন্তু আপনার পছন্দের ওয়েবসাইট গুলো, যেমন-৪০৪ ওয়্যারবিডি লোড না নিলে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরার কোন কারণ নেই। এই আর্টিকেলে আমি কিছু ট্রিকস শেয়ার করেছি, যেগুলোর মাধ্যমে জানতে পারবেন আপনার পছন্দের ওয়েবসাইট হঠাৎ লোড না নিলে কি করবেন!

সাম্ভাব্য কারণ

একটি ওয়েবসাইট লোড না নেওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে, তবে চিন্তার কোন ব্যাপার নয়, এই কারণ গুলো খুঁজতে আপনাকে বিশাল টেক গীক হতে হবে না। অনেক সহজেই খুঁজে বের করতে পারবেন আসলে সমস্যাটা কোথায়। অনেক সময় সাইটে ওভার ট্র্যাফিক, কোড এরর এমনকি সাইবার অ্যাটাকের ফলেও পেজ এরর হয়ে যেতে পারে। এরকম সমস্যা দূর করতে ব্রাউজারে রিফ্রেশ বাটনই যথেষ্ট, তাছাড়া আর তেমন কিছু করারও নেই। সার্ভার সাইডের যেকোনো সমস্যায় আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে এবং পেজটি রিফ্রেশ করতে থাকতে হবে, সাইট কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধান করা মাত্রই আপনার ব্রাউজারে সাইটটি লোড হয়ে যাবে।
অপরদিকে সমস্যা কিন্তু আপনার দিক থেকেও থাকতে পারে। হয়তো আপনার ইন্টারনেট সিকিউরিটি সফটওয়্যার ঐ নির্দিষ্ট সাইটের লিংক ব্লক করে দিয়েছে বা হতে পারে আপনার ফায়ারওয়াল থেকেই সমস্যা হচ্ছে, অনেক সময় ব্রাউজার এক্সটেনশন বা অ্যাডস ব্লকার টুল গুলোর জন্যও অনেক সাইট লোড হতে ব্যর্থ হতে পারে। তো প্রথমে আপনাকে যা করতে হবে, এই লিংক থেকে চেক করতে হবে বাকি সবার জন্য ওয়েবসাইটটি ওপেন রয়েছে কিনা। তাছাড়া আপনি ফেসবুক বা টুইটারের পেজ চেক করতে পারেন, কেননা একই সাথে অনেকের কাছে সাইটটি লোড না হলে সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট হবে। যদি সাইট আপ রয়েছে এরকম রেজাল্ট প্রদর্শন করে তাহলে বুঝতে হবে আপনার এন্ড থেকেই সমস্যাটা রয়েছে।
ফিক্সিং কিন্তু খুবই সহজ হতে পারে। আপনি টেম্পোরারি সিকিউরিটি সফটওয়্যার ডিসেবল বা আনইন্সটল করে দেখতে পারেন। তারপরে আপনার ফায়ারওয়াল রুল চেক করে নিতে হবে লিংকটি ব্লক রয়েছে কিনা। এবার আপনি ব্রাউজার পরিবর্তন করতে পারেন বা কারেন্ট ব্রাউজারের ইনকগনিটো মুডে প্রবেশ করে সাইটটি লোড করার চেষ্টা করতে পারেন।
এরপরেও যদি কাজ না করে, সেক্ষেত্রে আপনার কম্পিউটারের হোস্ট ফাইল চেক করতে হবে, হোস্ট ফাইল হচ্ছে আপনার কম্পিউটারের একটি অ্যাড্রেসবুকের মতো, যে ওয়েবসাইটটি আপনার কম্পিউটারে লোড হচ্ছে না হতে পারে সেই সাইটটি সম্পর্কে আপনার হোস্ট ফাইলে কোন তথ্য রয়েছে।

সলিউশন

স্বাভাবিকভাবে উপরের স্টেপ গুলো নেওয়ার পরে আপনার পছন্দের ওয়েবসাইট লোড হতে আরম্ভ করে দেবে, কিন্তু তারপরেও যদি কাজ না হয় সেক্ষেত্রেও কিছু ফিক্স রয়েছে। যেমন হতে পারে আপনার পছন্দের সাইট’টি আপনার আইএসপি – ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার বা সরকার থেকে ব্লক করা, সেক্ষেত্রে আমি ভিপিএন ব্যবহার করে সাইটের আক্সেস বাইপাস করতে পারেন। ভিপিএন বা ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক আপনার আইপি অ্যাড্রেস স্পুফ করে, ফলে এটা এমন আচরন করে যাতে মনে হয় আপনি আলাদা দেশ থেকে ভিজিট করছেন আর যেখানে আপনার পছন্দের সাইটটি ব্লক করা নেই। তাছাড়া আপনি প্রক্সি, টর নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেও ব্লক থাকা সাইট বাইপাস করতে পারেন।
অনেকেই পিসিতে ভিপিএন ইন্সটল করতে চান না, তাদের জন্য startpage.com সার্চ ইঞ্জিনটি বেটার হতে পারে। আপনার সাইটের নাম লিখে সার্চ করুণ তারপরে ডাইরেক্ট লিংকে প্রবেশ না করে “Anonymous View” লিংকে প্রবেশ করুণ, ব্যাস এভাবে আপনি ওয়েব প্রক্সির ব্যবহার করে আপনার কান্ট্রি লক বা আইএসপি লক বাইপাস করতে পারবেন।
তবে অনেক সময় ওয়েবসাইট’টি নিজে থেকেই ডাউন থাকতে পারে, মানে সার্ভার প্রবলেম বা যেকোনো টেকনিক্যাল সমস্যা থাকতে পারে। আর সে সময় আপনি সাইটটি লাভ আক্সেস করতে পারবেন না। কিন্তু যদি আক্সেস করতেই হয় সেক্ষেত্রে ক্যাশ ভার্সন সহজেই আক্সেস করা যেতে পারে। গুগল সহ অনেকেই সাইটের ক্যাশ ভার্সন নিজেদের সার্ভারে জমা করে রাখে, গুগল সার্চ রেজাল্ট থেকে ওয়েবসাইটটির নামের পাশে একটি ডাউন আর‍্যো কী রয়েছে, সেখানে ক্লিক করলে “Cached” নামক একটি অপশন দেখতে পাবেন এবং আপনি সাইটটির ক্যাশ ভার্সন ভিউ করতে পারবেন।
Wayback Machine নামক একটি ডেডিকেটেড সার্ভিস রয়েছে যেখানে যেকোনো ওয়েবসাইট লিংক প্রবেশ করিয়ে পুরাতন যেকোনো সময়ের ক্যাশ ভার্সন আক্সেস করতে পারবেন। অনেক সময় ওয়েবসাইট ডাউন থাকলে আর আপনি সত্যিই অনেক পুরাতন পেজ খোঁজার দরকার পড়লে এই টুলটি আপনার বেশ কাজে লাগতে পারে। অনেক সময় কোন পুরাতন ডিলিট হয়ে যাওয়া আর্টিকেল ও আপনি এই টুল থেকে খুঁজে পেতে পারবেন। কেননা ইন্টারনেটে যেটা একবার আপলোড হয়ে যায় সেটা আর সম্পূর্ণভাবে কখনই রিমুভ হয় না।
তো এই ছিল কিছু ট্রিকস, যেগুলো আপনার পছন্দের সাইট হঠাৎ লোড না নিলে অ্যাপ্লাই করে দেখতে পারেন, তাছাড়া আপনি চাইলে পছন্দের সাইট বা যেকোনো আর্টিকেল গুলোকে অফলাইন করে রাখতে পারেন, যখন আপনার ইন্টারনেট কানেকশন থাকবে না তখন সহজেই ব্রাউজ করতে পারবেন, এই আর্টিকেল থেকে জানুন – কিভাবে যেকোনো ওয়েবসাইট’কে অফলাইন বানিয়ে ইন্টারনেট ছাড়াই ব্রাউজ করবেন!